আমার নারায়ণগঞ্জ:
গ্রাহক সুবিধা বৃদ্ধির কথা বলে প্রিপেইড মিটার স্থাপন শুরু হলেও এখন অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে এ কার্যক্রমের। উল্টো গ্রাহক হয়রানি বেড়েছে কয়েকগুণ। স্থাপন করা এসব প্রিপেইড মিটারগুলো এখন গ্রাহকদের অনেকটা গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যখন তখন লক হয়ে যাওয়া, টাকা রিচার্জে সমস্যা, ব্যাটারি সিন্ডিকেটে পড়ে গ্রাহকদের নাভিশ্বাঃস উঠেছে।
বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার রিচার্জ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে গ্রাহকেরা।রিচার্জ করার সময় তাদের স্বাভাবিকের চেয়ে ১২ গুণ দীর্ঘ ডিজিট চাপতে হচ্ছে।আর তা করতে গিয়ে ভুল হচ্ছে। তিনবার ভুল হলেই মিটার লক হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুতের নতুন মূল্য নির্ধারণ হওয়ার পর থেকে এ সমস্যা বেশি। এছাড়াও মাঝে মধ্যে সার্ভার জটিলতার কারণে মিটারে রিচার্জ করা যাচ্ছে না। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে তারা। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে জনগনের।
সরেজমিনে বন্দর শাহীমসজিদ এলাকায় অবস্থিত বিদ্যুৎ গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় দুই থেকে তিনশ গ্রাহকের সিরিয়াল। সবাই প্রিপেইড মিটারের রিচার্জ করতে এসেছেন। কেউ এসেছে আবার টোকেন নম্বর নিতে। মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ, রকেট, নগদ থেকে তারা মিটার রিচার্জ করতে না পেরে কোনো উপায় না পেয়ে তারা অফিসে এসে রিচার্জ করছে। এর মধ্যে অনেক গ্রাহকের বাড়িতে বিদুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গরমের মধ্যে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে তাদের মিটার রিচার্জ করতে হয়েছে।
নারায়নগঞ্জের বন্দর চৌধুরীবাড়ি এলাকার বাসিন্দা সুজন মিয়া বলেন,গত তিনদিন আগে আমার মিটারে টাকা শেষ হয়ে মিটার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পরবর্তীতে নিজের বিকাশ একাউন্ট থেকে রিচার্জ করে দেখি মোবাইলের বিকাস থেকে টাকা ঠিকই কেটে নেয়া হয়েছে কিন্ত রিজার্জ হচ্ছে না।পরে বিকাসের অফিসে অনেক যোগাযোগ করা হলে কোম্পানী তিনদিন পর টাকা ফেরত দেয়। আমরা মধ্যবিত্ত মানুষরা মাস শেষে সবকিছুর জন্য টাকা আলাদা করে রাখি এর মধ্য যদি বিকাস কোম্পানী তিনদিন পর টাকা ফেরত দেয় তাহলে কি এই তিনদিন বিদ্যুৎ ছাড়াই বাচতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ গলাচিপা এলাকার বাসিন্দা মিজান জানান, মিটারের টাকা শেষ হয়ে যাওয়ার পর নিজের বিকাস থেকে অনেক চেষ্টা করেও রিচার্জ করতে পারেনি। পরে বাজারের মধ্যে একটি বিকাশ এজেন্টে গিয়ে রিচার্জ করতে গেলে তারা বলে যে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে রিজার্জ হচ্ছে না সার্ভারে সমস্যা দেখাচ্ছে।পরবর্তীতে আমি গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে গিয়ে ১ ঘন্টার বেশি লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে মিটারে রিচার্জ করেছি।ততক্ষণে আমার দোকান বিদুৎ বিচ্ছিন্ন ছিলো।রিচার্জ করার পর বিদ্যুৎ আসে।
নবীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন একই সমস্যা নিয়ে এসেছিলেন বিদ্যুতের অফিসে। তিনি বলেন, সকাল ৯টার দিকে হঠাৎ মিটার রিচার্জ করতে গিয়ে দেখি রিচার্জ হচ্ছে না। কয়েকবার চেষ্টা করার পর বিকাশ থেকে রিচার্জ করা গেলেও টোকেন নম্বর আসেনি। পরবর্তীতে বিদ্যুৎ অফিসে এসে দেখি দুই/তিনশ সিরিয়াল। লাইনে দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে পরে টোকেন নম্বর নেওয়া লেগেছে। ততক্ষণ আমাদের দোকান/বাসা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। প্রিপেইড মিটারের গ্রাহকরা এরকম প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, বেশিরভাগ সময় বিকাশ ও নগদ থেকেই প্রি-পেইড মিটারের বিদ্যুৎ কেনেন তারা। বিদ্যুৎ শেষ হয়ে গেলেই তাদের ভোগান্তি শুরু হয়। বিকাশ থেকে টাকা কেটে নিলেও টোকেন পাওয়া যায় না। এ নিয়ে বিকাশ কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করলে তারা ওজোপাডিকোর সার্ভারে ত্রুটি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন।