আমার নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পারিবারিক কলেজের জেরে স্ত্রী রোকসানা বেগম (৩০) ও শিশু সন্তান জান্নাতুল ফেরদৌসকে (৫) কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামী নুর জামালের বিরুদ্ধে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে তারাবো পৌরসভার তেৎলাব এলাকায় শহীদ মিজির ভাড়া বাড়ির দ্বিতীয় তলায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে তাদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে মারা যান শিশুর মা রোকসানা বেগম।পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশু জান্নাতকে ঢামেক হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল চারটার দিকে মারা যায় সে।
এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে স্বামী নুর জামাল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত লিয়াকত আলি।
জানা যায়, নিহত রোকসানা বরিশালের তরিকাটা গ্রামের আমতলী থানার শাজাহান হাওলাদারের মেয়ে। রোকসানা ও নুর জামাল দম্পতির একমাত্র মেয়ে ছিল পাঁচ বছর বয়সী শিশু জান্নাত।
নিহত রোকসানার বোন সীমা আক্তার জানান, তার বোন একটি গার্মেন্টসে পোশাক শ্রমিকের কাজ করতো। ৮ বছর আগে রোকসানার সাথে নুর জামালের সাথে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক হয়। এক পর্যায়ে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। গত একমাস যাবত শরীর অসুস্থ থাকায় রোকসানা গার্মেন্টসে যেতে পারেনি। তার স্বামী নুরজামালও তেমন একটা কাজ কাম করতো না। এছাড়া নুর জামাল একাধিক বিয়ে করায় স্বামী স্ত্রীর মাঝে প্রায়ই কলহ লেগে থাকতো।
তিনি বলে, ‘গতরাতে পারিবারিক বিষয় নিয়ে রোকসানার সাথে তার স্বামীর কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে স্বামী নূর জামাল ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রোকসানাকে গুরুতর আহত করে। এ সময় পাঁচ বছরের শিশুকন্যা জান্নাত চিৎকার করলে তাকেও কুপিয়ে আহত করে। তাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজনরা এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় নুর জামাল। পরে স্থানীয় লোকজনরা গুরুতর আহত অবস্থায় আমার বোন ও আমার শিশু ভাগ্নিকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মারা যায় আমার বোন রোকসানা।’
এদিকে আজ বিকেলের দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আমার শিশু জান্নাতকেও ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে বলে জানান সীমা আক্তার।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত লিয়াকত আলি বলেন, ‘পারিবারিক কলহে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি। অভিযুক্ত স্বামী নুর জামাল পলাতক রয়েছে। আমরা আরও জানতে পেরেছি শিশুটিও ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।’
এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামীকে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান ওসি লিয়াকত আলি।