আমার নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপে ব্যাপক সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় বেশ কয়েকটি দোকানপাট এবং বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) উপজেলার তারাব পৌরসভার তারাব বাজার এলাকায় রাত ১০টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পরে খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ আট রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় হৃদয় খান (২৫) নামে একজনকে আটকও করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, তারাব পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তারাব বাজার শিল্প ও জনবহুল এলাকা। এখানে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অংশ থাকায় ছিনতাই, ডাকাতি, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও মাদক কারবারসহ নানা অপরাধের সঙ্গে স্থানীয় দুটি কিশোর গ্যাং জড়িত। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন তারাব উত্তরপাড়া এলাকার বকুল ভুইয়ার ছেলে শিমুল ভুইয়া। অপর গ্রুপটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন রুবেল মিয়া, শ্রাবণ ও আকবর বাদশা।
এই অপরাধ জগতের আধিপত্য বিস্তার ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে কিশোর গ্যাং শিমুল গ্রুপের প্রধান শিমুল ভুইয়াকে মারধর করেন অপর কিশোর গ্যাং গ্রুপের রুবেল মিয়া, শ্রাবণ ও আকবর বাদশা গ্রুপ বাহিনীর সদস্যরা। এ নিয়ে উভয় পক্ষে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
পরে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য নামে খ্যাত চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকা থেকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে কিশোর গ্যাংয়ের দু-গ্রুপের সদস্যরা রামদা, চাপাতি, পিস্তলসহ নানা ধরনের দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে রাত ১০টার দিকে সংঘর্ষে জড়ান। এতে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ফাঁকা গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ হলে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেন। একপর্যায়ে হামলাকারীরা তারাব বাজারের রাস্তায় টায়ারে অগ্নিসংযোগ করেন। সংঘর্ষে পথচারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে কোহিনুর বেগম ও বাদল মিয়া নামে দুজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা শুক্রবার (৩১ মে) দুপুরে সময় সংবাদকে বলেন, ‘দুই গ্রুপে সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা থানা পুলিশের কয়েকটি দল ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে দেখি উভয় গ্রুপের সদস্যরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটসহ তাণ্ডব চালাচ্ছে এবং মহড়া দিচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আট রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করি। একপর্যায়ে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে হৃদয় খান নামে একজনকে আমরা আটক করেছি। সংঘর্ষ শেষে রাত থেকেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে সংঘর্ষ, হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েকজনকে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’