আমার নারায়ণগঞ্জ:
নারায়নগঞ্জের ফতুল্লায় যুবসমাজের বড় একটি অংশ মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। শুধু মাদকের টাকা জোগাড় করতে নেশায় আসক্ত এসব যুবক জড়িয়ে পড়ছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে। সম্প্রতি চুরি, ছিনতাই, হামলাসহ নানা ধরনের অপরাধ বেড়ে যাওয়ার মূলে রয়েছে মাদক ব্যবসা ও সেবন। ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় প্রায়ই ঘটছে দিনদুপুরে চুরির ঘটনা।
দিনকে দিন অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ছাড়াও সমাজের উঠতি বয়সের অনেকে নেশার টাকা জোগাড় করতে না পেরে আত্মহত্যার মতো কঠিন পথ পর্যন্ত বেছে নিচ্ছে। সবমিলিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় আছেন অভিভাবকরা। তাদের অনেকেই নেশায় আসক্ত সন্তানদের সুপথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফতুল্লার ইসদাইর,গাবতলী,পুলিশ লাইন ও গোরস্থানসহ বিভিন্ন এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী সুজনের মাদক প্রকাশ্যে বিক্রি চলছে। সন্ধ্যা নামলেই এসকল এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী সুজনের আওতায় চলছে মাদক বিক্রি ও মাদক সেবনের আসর। মাদক ব্যবসায়ী সুজনের জমজমাট মাদক ব্যবসার কারণে গাবতলী বাজার ,পুলিশ লাইন টাগার পাড়,ইসদাইর বাজার ও মাসদাইর গোরস্থান এলাকায় হাত বাড়ালেই মিলছে আইস,গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন ও ইয়াবা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাদকদ্রব্য বিক্রির স্পটগুলোতে মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে মাদক কারবারিদের আটক করলেও সাক্ষীর অভাবে আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে বেরিয়ে যায় তারা। এরপর আবারও জড়িয়ে পড়ে মাদক ব্যবসায়। মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা কৌশলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তরুণ-তরুণীদের মাঝে বিভিন্ন ধরনের মরণ নেশা পৌঁছে দিচ্ছে। মাদক সেবন করে উঠতি বয়সী কিশোররা বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত হচ্ছে, কিশোর গ্যাং নামে আত্মপ্রকাশ ঘটছে অপরাধী চক্রের। কিছু অসাধু ও ক্ষমতাধর ব্যক্তিও সক্রিয়ভাবে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এ কারণে তারা থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে। এসব মাদক কারবারি ও সেবনকারী রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা ও সেবন করে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানার জন্য কথা হয় ফতুল্লা থানার ওসি নূরে আযমের সঙ্গে। তিনি বলেন, মাদক নির্মূলে আমার থানার প্রতিটি অফিসার কাজ করে যাচ্ছেন। কোনোভাবেই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না।
স্থানীয়রা বলছেন, পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জরুরিভিত্তিতে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। মাদক সিন্ডিকেট শিকড় থেকে উপড়ে ফেলতে হবে। তা না হলে সমাজে এই মাদকের ভয়াল থাবা থেকে কেউই নিরাপদ নয়। উঠতি বয়সি তরুণ-তরুণীরা ধ্বংস হচ্ছে। গড়ে উঠছে ছোট-বড় কিশোর গ্যাং। অভিভাবক মহল রয়েছে চরম বিপাকে। মাদকের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে অনেকে চুরি-ছিনতাই করছে।
এ বিষয়ে ইসদাইর এলাকার সানি মিয়া বলেন, আমার ছোট ছেলে আবু হাসান (১৪) মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। তাকে নিয়ে আমি ও আমার স্ত্রী খুবই বিপদে আছি। ঘরের একটা জিনিসও নেই। ওই ছেলে সব বিক্রি করে ফেলেছে। কিছু বলতে গেলেই তেড়ে আসে মারপিট করতে।