আমার নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জের রিয়া পড়াশোনা করতেন মালয়েশিয়ায়। আগামীকাল (২ মার্চ) ফিরে যাওয়ার কথা ছিলো সেখানে। কিন্তু যাওয়া হলো না। রাজধানীর বেইলি রোডের আগুন কেড়ে নিলো তার প্রাণ।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা যায় সেখানে অসংখ্য মানুষের ভিড়। তাদের কারো চোখে পানি, কেউ বুকফাটা কান্নায় হারিয়ে গেছেন। তাদের পাশে লাশবাহী ট্রলি নিয়ে অপেক্ষায় মর্গের সদস্যরা।
জরুরি বিভাগে প্রবেশ করতেই স্বজনদের আর্তনাদ দেখে চোখ ভিজে উঠেছে। এক পাশের মেঝেতে গা এলিয়ে দিয়ে কান্না করছে কয়েক মৃতের পরিবার। তাদের পাশে নিথর হয়ে বসে আছেন রিয়ার বাবা কুরবান আলী। তিনি নারায়ণগঞ্জের পোশাক কারখানা রিয়া ফ্যাশনের মালিক। মেয়েকে হারিয়ে একেবারে নিস্তব্ধ। পাশে পরিবারের অন্য সদস্যরা বিলাপ করছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়ে উঠেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাদের একজন প্রতিবেশী পাশে অপেক্ষা করছিলেন। তিনি আমার নারায়ণগঞ্জকে বলেন, এই ভদ্রলোকের অঢেল সম্পদ। দুই মেয়ের জন্য কী না করতেন। কিন্তু এখন এক মেয়েকে হারিয়ে ফেললেন। নিজেকে হয়তো সামলে নিতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন, ২ তারিখ রিয়ার ফিরে যাওয়ার কথা ছিলো মালয়েশিয়ায়। কিন্তু কার ভাগ্য কি লেখা কে জানে। তার মৃত্যু এখানেই লিখা ছিলো তাই মৃত্যুই তাকে এখানে ডেকে এনেছে। রিয়ার পরিবারের মতো অসংখ্য মানুষ স্বজনকে হারিয়ে পাগলপ্রায় হয়ে কাঁদছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামের একটি রেস্তোরাঁয় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ আগুনের ঘটনায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা গেছেন ১০ জন। এছাড়া ভর্তি রয়েছে আরও অনেকে। এই ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে আরও ৩৩ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে কয়জন নারী, পুরুষ কিংবা শিশু তা এখনও জানার চেষ্টা চলছে। রাতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।