আমার নারায়ণগঞ্জ:
পুলিশের বিশেষ অভিযানে ‘ডেভিল ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ নামের একটি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি)।
তারা হলেন- চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানাধীন নারায়ণপুর এলাকার শাহ আলম প্রধানের ছেলে শাকিল আহম্মদ (৩০) ও বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানাধীন ইদিলকাঠি এলাকার নূর মোহাম্মদ মোল্লার ছেলে রাকিব (৩২)।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে চাঁদপুর সদর থানা এলাকা থেকে শাকিলকে ও ঢাকার টিকাটুলি এলাকা থেকে রাকিবকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়েছে ১০ গ্রাম স্কোপোলামিন, ১ কেজি গুঁড়া ও ২ লিটার পটাশিয়াম সায়ানাইড, ২.৫ লিটার ক্লোরোফর্ম, ছয়টি মোবাইল, একটি ল্যাপটপ ও একটি খাতা।
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) চাই লাউ মারমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মো: তরিকুল ইসলাম, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, চলতি বছরের ২৩ আগস্ট নিখোঁজের এক দিন পরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে উপজেলার পূর্বাচল উপশহরের গোবিন্দপুর ২০ নম্বর সেক্টরের একটি ঝোপের পাশ থেকে আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৬) নামে নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ফেনী জেলার সদর উপজেলার গজারিকান্দি এলাকার আবুল কালামের ছেলে। স্ত্রী মোরশেদা বেগমকে নিয়ে তিনি ঢাকার দক্ষিণ খান এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক মামুনের ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে তদন্তে নামে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি টিম।
প্রথমে চাঁদপুর থেকে শাকিলকে গ্রেফতার করার পরে বেরিয়ে আসে হত্যাকাণ্ডের রহস্য। শাকিল ডেভিল ব্রেথ বা শয়তানের নিঃশ্বাস নামের একটি ফেসবুকের পেজ খুলে অনলাইনে স্কোপোলামিন নামের নতুন এক ধরনের মাদকসহ সায়ানাইডসহ নানা ধরনের পণ্য বিক্রি করে আসছিল। শাকিলের কাছ থেকে গ্রাহকদের একটি খাতাও উদ্ধার করা হয়। পরে টিকাটুলি থেকে রাকিবকে গ্রেফতার করা হয়। রাকিব এসব মাদক ও বিষ সরবরাহ করতো। স্কোপোলামিন নতুন এক ধরনের মাদক যা সেবন করলে ওই ব্যক্তি সম্মোহিত হয়ে যেকোন অপরাধ ঘটিয়ে ফেলতে পারে। গত এক বছর ধরে চক্রটি এই মাদক বিক্রি করে আসছিল।
গ্রেফতার ব্যক্তিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে চক্রের বাকি সদস্যদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল।