আমার নারায়ণগঞ্জ:
এক সময় রঞ্জু ওরফে পোড়া রঞ্জুকে ছিঁচকে চোর ও পকেটে মার হিসেবে চিনতেন শহরের অনেকেই। তবে চুরি, ছিনতাই করা সেই রঞ্জু সময়ের ধারাবাহিকতায় বর্তমানে হয়ে উঠেছে শহরের অপরাধ জগতের আন্ডারগ্রাউন্ড সন্ত্রাসীদের একজন। তথ্য বলছে, ২০১১ সাল থেকে শুরু করে ২০১৩ সাল পর্যন্ত হত্যা, হত্যা চেষ্টা, অস্ত্র, মাদক, জমি দখল, মারামারিসহ বেশ কয়েকটি অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকায় দীর্ঘদিন জেল হাজতে ছিলেন। আর জেল থেকে সেসব মামলায় জামিনে এসে বিভিন্ন অপরাধীদের সাথে যোগাযোগ করে নিজেই গড়ে তুলেছে একটি বাহিনী।
অনুসন্ধান বলছে, রঞ্জুর নিয়ন্ত্রিত সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে শহরে বিভিন্ন অপরাধ করে বেড়াচ্ছে। এর মধ্যে, মাদক কারবার, চুরি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, রঞ্জুর নিয়ন্ত্রণে শহরের আমলা পড়া, ডনচেম্বার, মিশন পাড়া, জামতলা, মেট্টোহলসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় মদক বেচা-বিক্রি চলমান রয়েছে। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শহরের চাষাঢ়া হর্কাস মার্কেট এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি শুভ ওরফে কাইল্লা শুভ ওরফে বুইট্টা শুভর মুলহোতা এই রঞ্জু ওরফে পোড়া রঞ্জু। এছাড়াও আমলা পড়া জাউল্লা পাড়া এলাকার সুমন ওরফে হিজলা সুমনের চলমান মাদক কারবার রঞ্জুর নিয়ন্ত্রণে চলছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মাদক কারবার ছাড়াও রঞ্জু ওরফে পোড়া রঞ্জুর নিয়ন্ত্রণে জামতলা ছাড়াও ৫ থেকে ৬টি এলাকার কমকরে ১৮ থেকে ২০টি ফ্ল্যাটে কৌশলে চলছে দেহ ব্যবসা। তার নিয়ন্ত্রিত ফ্ল্যাট গুলোর বেশ কয়েকটি পুরো জেলার পরিচিত ও চিহ্নিত পতিতাদের সর্দারনী কচি ওরফে ভাবির লোকজন পরিচালনা করেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রঞ্জুর শেল্টারে চলমান এসব ফ্ল্যাট গুলো থেকে প্রতিটি অনৈতিক কাজের বিনিময়ে নির্দিষ্ট টাকা আলাদা ভাবে তোলা হয়। ফলে দিনে অথবা সপ্তাহে প্রতিটি ফ্ল্যাট থেকে তাদের পকেটে ৩ হাজার থেকে ১৫ হাজার পর্যন্ত পৌঁছে যায়। অভিযোগ রয়েছে, তার নিয়ন্ত্রিত ফ্ল্যাট গুলোতে( যেসব ফ্ল্যাটে দেহ ব্যবসা হয়) পুলিশ, সাংবাদিক অথবা রাজনৈতিক কেউ বাধা দিলে প্রথমেই তাদের বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের চলে যেতে বলে। তবে সে সকল মাধ্যমে কাজ না হলে মুঠো ফোনে কল করে হুমকি দেয়া হয়। এতেও কাজ না হলে রঞ্জু ওরফে পোড়া রঞ্জু তার বাহিনী নিয়ে দেশীও অস্ত্র হাতে হামলা চালায়।
তথ্য বলছে, শুধু মাদক কারাবার ও পতিতা বৃত্তি করেই ক্ষেন্ত হয়নি এরা৷ বর্তমানে শহরের সক্রিয় চুরি, ছিনতাই করা সদস্যদের লিডার রঞ্জু। তার নিয়ন্ত্রণে কয়েকটি সক্রিয় চক্র পুরো জেলার বিভিন্ন স্থানে চুরি- ছিনতাই করছে৷ জানা গেছে, এসব সক্রিয় চোর ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের কেউ যদি কোথাও হাতেনাতে ধরা পড়ে, তবে প্রথমে রঞ্জু ওরফে পোড়া রঞ্জু মুঠোফোনে নিজেকে রাজনৈতিক দলের নেতা দাবি করে বলেন ওরে ছেড়ে দেন। ও আমার লোক৷ পরে ফোনে তার কথায় কাজ না হলে সাথে, সাথে সেই চোর অথবা ছিনতাইকারীকে ছাড়িয়ে আনতে নিজের বাহিনী পাঠিয়ে দেন।