আমার নারায়ণগঞ্জঃ
নারায়নগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় মাদকের বড় রকমের ব্যবসা চলছে। বিভিন্ন স্থানে হরদম মাদক কেনাবেচা চলছে। এলাকার তরুণেরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়লেও এ কারবার নিয়ন্ত্রণের বাইরেই রয়েছে। মাদক ব্যবসা ঘিরে হত্যাসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চলছে নিয়মিত।
নারায়নগঞ্জের খানপুর ব্যাংক কলোনী এলাকায় হাত বাড়ালেই মিলছে সব ধরনের মাদকদ্রব্য। মরণনেশা ইয়াবায় ডুবে থাকছে৷ জেলার উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত শ্রেণির হাজারো মানুষ। এ তালিকায় রয়েছে ওঠতি বয়সী যুবসমাজ, স্কুল-কলেজের ছাত্র, সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। এতে করে জেলায় মাদকাসক্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এলাকায় ওঠতি তরুণ ও যুবক ইয়াবাসেবীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় অভিভাবকমহল উদ্বিগ্ন-উৎকণ্ঠায় আছেন।
নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর ব্যাংক কলোনি এলাকায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে মাদক মামলার আসামি ও চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী কৃষ্ণার রমরমা মাদক ব্যবসা। একাধিকবার প্রশাসনের হাতে গ্রেফতারের পরও কৃষ্ণার মাদক বিক্রির দৌরাত্ম যেন কিছুতেই কমানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
চলমান মাদক বিরোধী অভিযানকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে নারায়ণগঞ্জ খানপুর ব্যাংক কলোনি ছোট মসজিদ এলাকায় কৃষ্ণা ও তার সহযোগীসহ বেশ কিছু মাদক কারবারী দিনে দুপুরে অবাধে অবৈধ মাদক বিক্রি করছে।
মাদকদ্রব্যের মামলায় মাদক ব্যবসায়ীদের আদালতে চালান দেয়ার কিছুদিন পর জামিনে এসে আবার মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দুর্বলের কারণে আসামিরা ছাড়াও পেয়ে যায়। ফলে উপজেলায় মাদকের ছড়াছড়ি হলেও মাদক ব্যবসায়ীরা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে।প্রতিদিন বাড়ছে মাদকসেবীর সংখ্যা, এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় অভিভাবকেরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একসময় জেলায় ফেনসিডিল, গাঁজা ও মদের ব্যবসা করতেন গুটিকয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী। তাও খুব গোপনে বেচাকেনা হতো। এখন গাঁজা-মদের পাশাপাশি চলছে মরণনেশা ইয়াবা ট্যাবলেটের ব্যবসা। যা প্রকাশে বিক্রি করছে মাদক ব্যবসায়ীরা । শুধু তাই নয়, এসব ইয়াবার ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েছেন জেলার নামী-দামি পরিবারের অনেকে। যাদের প্রতিরোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। স্থানীয়রাও ভয়ে কেউ এসব মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার এক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বলেন, ক্ষমতাধর এসব মাদক ব্যবসায়ীরা সবাই অল্পবয়সী। এরা মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িত একথা শুনলে কেউ বিশ্বাসও করবে না। কারণ এরা সবাই ভালো পরিবারের সন্তান। প্রতিদিন সকাল বেলা উন্নতমানের পোশাক পরে বাড়ি থেকে বের হয়, আর রাতে বাড়িতে ফেরে। পোশাকধারী এসব যুবকদের পকেটে থাকে ইয়াবা ট্যাবলেট যা প্রকাশ্যে হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করে পরিচিত মাদক সেবনকারীদের কাছে। এ কারণে এসব আল্পবয়সী মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে পারছে না পুলিশ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন, মাদক সেবন মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন মাদক সেবনে শরীর দুর্বল হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়ে যায়। বিভিন্ন জটিল রোগব্যাধি শরীরে বাসা বাঁধে। ধীরে ধীরে স্মৃতি শক্তি লোপ পায়। স্বাভাবিক যৌনশক্তি হারিয়ে যায়। মানে রাখতে হবে, মাদক মানে মরণ।
মাদকের নেশার ছোবলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আমাদের অল্পবয়সী যুবক ছেলেরা। ধ্বংস হচ্ছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরাও। নতুন নতুন এসব মাদক ব্যবসায়ী হওয়ার কারণে বাড়ছে মাদক সেবনকারীর সংখ্যা। এসব মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক তুলে দিচ্ছে ওঠতি বয়সী যুবকদের হাতে। যার মধ্যে বেশির ভাগ স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। মা-বাবার চোখের সামনে মাদকাসক্ত হচ্ছে ছেলে। এ কষ্ট কিভাবে মেনে নেবে অভিভাবকরা। তাই মাদকাসক্ত সন্তানদের নিয়ে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন শিক্ষার্থীরে বাবা-মা।
স্থানীয়রা বলেন,দেশের যুবসমাজকে রক্ষা করতে হলে এসব মাদক ব্যবসায়ীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে যুব সমাজ ধংস হবে।চুরি ছিনতাই,খুন অপরাধ বেড়ে যাবে।আর এ জন্য পুলিশকে আরো সক্রিয়ভাবে মাঠে নামতে হবে। এবং অভিয়ান পরিচালনা করে মাদক ব্যাবসায়ীদের গ্রেফতার করে কঠিন বিচারের আওতায় আনতে হবে।