আমার নারায়ণগঞ্জঃ
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে নারায়ণগঞ্জ থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। শনিবার (১৩ মে) দুপুরে সেন্ট্রাল লঞ্চঘাট ঘুরে লঞ্চ চলাচল বন্ধের চিত্র দেখা যায়। ফলে অনেক যাত্রী লঞ্চঘাটে এসে ফিরে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নারায়ণগঞ্জ থেকে পাঁচটি রুটে চলাচলকারী লঞ্চগুলো সারিবদ্ধভাবে ঘাটে ভিড়ানো। লঞ্চের স্টাফ ও কর্মচারীরা অবসর সময় পার করছেন। আর যাত্রীরা ঘাটে এসে ফেরত যাচ্ছেন। কেউ কেউ সড়ক পথে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা করছেন।
সুরেশ্বর যাওয়ার উদ্দেশে শহরের নিতাইগঞ্জ থেকে দুই মেয়েকে নিয়ে লঞ্চঘাটে আসা রত্না বেগম বলেন, ঘাটে এসে দেখি, লঞ্চ চলাচল বন্ধ। গ্রামের বাড়িতে যেতে চেয়েছিলাম, তা আর হলো না। এখন বাসায় ফিরে যেতে হবে।
মতলব যাওয়ার উদ্দেশে ঘাটে এসেছেন ষাটোর্ধ্ব বিলকিছ বেগম। তিনি বলেন, ঘাটের লোকজন জানিয়েছে, আজ লঞ্চ বন্ধ। এখন সড়ক পথে যেতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ টু নড়িয়া নৌপথে চলাচলকারী নড়িয়া-৪ লঞ্চের স্টাফ মো. আজিজুর মিয়া বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। কবে নাগাদ চালু হবে জানা নেই। কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে চালু করবো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ থেকে পাঁচটি নৌপথে ৪৪টি লঞ্চে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। নৌপথগুলো হলো- নারায়ণগঞ্জ-চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ-রামচন্দ্রপুর, নারায়ণগঞ্জ-নড়িয়া ও নারায়ণগঞ্জ-মতলব।
বিআইডব্লিউটিএ’র নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের উপ-পরিচালক (নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক) বাবু লাল বৈদ্য আমার নারায়ণগঞ্জকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে হেড অফিসসহ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বাতিল করা হয়েছে সব কর্মকর্তার ছুটি। গতকাল সন্ধ্যা থেকে নারায়ণগঞ্জের সব নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। এ ছাড়া যাত্রীদের নিরাপত্তা স্বার্থে সব বন্দরে মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে।
এদিকে, লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকার ফলে সড়ক পথ বেছে নিচ্ছেন বহু যাত্রী। লঞ্চঘাটের পাশে যাত্রীদের ভিড় দেখে বাঁধন পরিবহনের একটি বাস যাত্রীদের তুলছেন। বাস সহকারী রাসেল মিয়া বলেন, লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকলে চাঁদপুর ও ভবেরচর এলাকায় যাত্রী নিয়ে যাওয়া হয়। মূলত যাত্রীর চাহিদার ওপর এটা নির্ভর করে। আজ লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় ভবেরচর এলাকার অনেক যাত্রী পেয়েছি। ভাড়া ১০০ টাকা। আরও কিছু যাত্রী হলে বাস যাত্রা শুরু করবে।