আমার নারায়ণগঞ্জঃ
ফতুল্লার পুলিশ লাইন লোহার মার্কেট সংলগ্ন একটি রপ্তানীমুখী পোষাক কারখানার ভিতর থেকে শয়ন চন্দ্র মন্ডলের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মোহন (২৫) নামক এক যুবক কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত মোহন ফতুল্লা মডেল থানার মাসদাইর দাদা সড়কের সাব্বিরের বাড়ীর ভাড়াটিয়া মোহাম্মদ জিতনের পুত্র। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ)রাত দশটার দিকে তাকে মাসদাইর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক হুমায়ুন কবির (২) জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত মোহন স্বীকার করে যে, নিহতের লাশ উদ্ধারের তিন দিন পূর্বে সন্ধ্যার মাসদাইর পাবনার মাঠে সে এবং সুমন নিহত শয়নের নিকট মাদক সেবনের জন্য মাদক দ্রব্য (ইয়াবা ট্যাবলেট) চায়।
কিন্ত শয়ন তাদের কে না দিতে চাইলে সুমন এবং মোহন লাঠি দিয়ে নিহত শয়ন কে বেধড়ক পিটুনি দেয়। এতে করে শয়ন মাটিতে পরে গেলে তারা পাবনা মাঠ থেকে চলে যায়। তিনদিন পর তারা লোকমুখে জানতে পারে যে শয়নের মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
সংবাদ শুনে তারা সাথে সাথে আত্নগোপনে চলে যায়। তবে কি ভাবে শয়ন বেস্ট ওয়েস্ট এ্যাপারেলস গার্মেন্টসের ভেতরের পরিত্যক্ত জায়গায় এসেছে তা তারা জানেনা।
তিনি আরো জানান, হত্যা মামলা দায়েরের পরে তিনি মামলার তদন্তে নেমে প্রথমে জানতে পারেন নিহত শয়ন,গ্রেফতাকৃত মোহন ও সুমন এক সাথে মাদক সেবন করতো। সেই সূত্র ধরে নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই সুমন এবং মোহন কে গ্রেপ্তারের চেস্টা করা হচ্ছিলো।
কিন্ত আত্নগোপন করায় তাদের কে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছিলোনা। মঙ্গলবার রাত দশটার দিকে মোহন কে মাসদাইর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
নিহত শয়ন চন্দ্র মন্ডল (৪৩)শহরের শেরে বাংলা রোড এলাকার জতীন্দ্র চন্দ্র মন্ডল ও লক্ষী রানী মন্ডলের ছেলে।
উল্লেখ্য যে, গত মঙ্গলবার (৭ মার্চ) সবে বরাতের দিবাগত রাত ৩টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ লাইন সংলগ্ন লোহার মার্কেটের পাশে অবস্থিত বেস্ট ওয়েস্ট এ্যাপারেলস গার্মেন্টসের ভেতরের পরিত্যক্ত জায়গা থেকে প্রথমে অজ্ঞাত পরিচয়ে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
লাশ উদ্ধারের পরদিন নিহতের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মহসিন জানান, লাশটি যে স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সেটি একটি রপ্তানীমুখী পোষাক কারখানা। জানতে পেরেছি ওই কারখানার ৪ জন মালিক রয়েছে। কিন্তু কারখানাটিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই।
কারখানার ভিতরে কলা গাছের একটি জঙ্গল রয়েছে এবং পিছন দিক থেকে বাহিরের লোকজন কারখানার ভিতরে প্রবেশ করতে পারে। আর ওই জঙ্গল থেকেই শয়ন মন্ডলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদেহের চারপাশে মাদকের নানা সরঞ্জাম পাওয়া গেছে।
এতে ধারনা করা হয় সে স্থানটিতে বাহিরের লোকজন প্রবেশ করে মাদকের আড্ডা বসাতেন। তবে লাশটি পচে বিকৃত হওয়ায় তাৎক্ষনিক মৃত্যুর প্রাথমিক ধারনা করা যায়নি। ময়না তদন্ত রিপোর্টে মৃত্যুর কারন জানাযাবে।
তিনি আরো বলেন, নিহতের বাবা জতীন্দ্র মন্ডল লাশটি সনাক্ত করে পুলিশকে জানিয়েছে শয়ন মাদকাসক্ত ছিলেন। তার স্ত্রী ও সন্তান আছে। নেশার টাকার জন্য বাড়িতে প্রায় সময় উৎপাত করতো। ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করত। তাকে নিয়ে পরিবারের সকলেই অশান্তি ছিলেন।