আমার নারায়ণগঞ্জ:
শহরের চাষাঢ়া থেকে কয়েক শ’ গজ দূরে চাঁনমারী এলাকাটি যার সন্নিকটেই রয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার, ডিবি অফিস আদালতসহ সরকারি বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তর।
জানা গেছে, ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের উপর দারিয়ে হাকডাক দিয়ে দিনে-রাতে পূর্বের ন্যায় বর্তমানেও প্রকাশ্যে শিষ দিয়ে বিক্রি হচ্ছে মাদক সম্রাজ্ঞী রুমি ও মাদক ব্যবসায়ী ফজরের মাদক। দীর্ঘদিন ধরেই চানমারী এলাকাটি অপরাধমূলক কর্মকান্ডের স্থান হিসেবে কুখ্যাত।
ঢাকা-নারায়নগঞ্জ লিংক রোডের উপর বিক্রি হয় মাদক সম্রাজ্ঞী রুমির ও মাদক ব্যবসায়ী ফজরের ফেনসিডিল, মদ, বিয়ার, গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন এখানে প্রকাশ্যেই শীষ দিয়ে তাদের মাদক বিক্রি হচ্ছে। এসব দেখেও কিছু করছে না পুলিশ। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের অদূরেই প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি হলেও এ ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঝেমধ্যেই অভিযান চালালেও বন্ধ হচ্ছেনা স্পটটি।
অভিযোগ রয়েছে, মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পুলিশ নিয়মিত মাসোহারা পায় বলেও অভিযোগ উঠেছে। দিনে-রাতে প্রকাশ্যে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের চাঁনমারী এলাকায় মাদক সম্রাজ্ঞী রুমি ও তার ভাই মাদক ব্যবসায়ী ফজরের মাদক বিক্রি হচ্ছে। রিকশা চালকেরা বাসের হেলপাররা রিকশা ও বাস দাঁড় করিয়ে রেখে প্রকাশ্যে মাদক কিনছে।
মাদকের বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ঘটছে অবনতি। প্রায়শই চাঁনমারী বস্তিতে আধিপত্য নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। বাড়ছে ছিনতাই, রাহাজানিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড।
মাদক সম্রাজ্ঞী রুমী আক্তার ওরফে রুমী জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ থানার বিরপাকের দেহ গ্রামের মুক্কার মেয়ে ও ফতুল্লা থানার তল্লা সবুজ বাগ এলাকার ভাড়াটিয়া লেবু মিয়ার স্ত্রী।
কিছুদিন আগে চাঁনমারিকে মাদকমুক্ত করার জন্য জেলা পুলিশের উদ্যোগে বস্তি উচ্ছেদের পর বুড়ির দোকান, তল্লা সবুজবাগ, মডেল গার্মেন্টস এলাকা এবং এর আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে মাদকের সাম্রাজ্য গড়ে তুলে মাদক সম্রাজ্ঞী রুমী। তল্লা মডেল গার্মেন্টস এলাকায় জামাই বাজার এবং সবুজবাগ এলাকায় অনেকটা প্রাকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে রুমীর মাদক।
রুমীর বাবা মাদক ব্যবসায়ী মোক্কা মিয়া চানমারী এলাকায় একসময়ে বেশ দাপটের সাথে মাদক ব্যবসায় করে ৫-৬ টা মাইক্রো বাস এবং জামালপুরে বিরাট অট্টালিকা বাড়ি নির্মান করেন।পরে মোক্কা মিয়া পুলিশের হাতে ধরা খাওয়ার পর তার বড় পুত্র খাদেম আলী এই মাদক সাম্রাজ্য গুছিয়ে নেন।বেশ কয়েক বছর খাদেম আলী ব্যবসা করার পর একসময় তার বোন রুমী আক্তার ও এই ব্যবসায় বেছে নেন।
থানাসূত্রে জানা যায় ২০২২ সালের ২৬মে (বৃহস্পতিবার) মাদক সম্রাজ্ঞী রুমীকে ফতুল্লা থানার তল্লা সবুজবাগস্থ সুমনের বাড়ীর ৪র্থ তলার এফ-৪০৪ নং ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এ সময় তার নিকট থেকে ত্রিশ গ্রাম (৩০০ পুরিয়া)হেরোইন সহ মাদক বিক্রির ১৯ হাজার ৭ শত টাকা উদ্ধার করে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
স্থানীয়দের দাবি চাঁনমারীর সাথে ডিবি অফিস ও এসপি অফিস থাকা সত্ত্বেও কিভাবে এই গোটা পরিবারের সদস্য এইরকম দাপটের সাথে মাদক ব্যবসা করে চলেছে তা কারোই বোধগম্য নয়।তারা একটাই দাবি করেন যাতে প্রশাসন এই পুরো পরিবারের উপর যথাযথ ব্যবস্থা নেন।