আমার নারায়ণগঞ্জঃ
ফুল ফুটুক আর না ফুটুক বসন্ত এসে গেছে। কোকিলের ডাকে যেন, চারদিকে মুখরিত হয়ে উঠেছে। ফুলের মিষ্টি সুবাসে জানান দিচ্ছে আজ বসন্ত। ফাগুনের দখিনা হাওয়ায় যেন হারিয়ে যেতে মন চায় দূরে কোথাও। নতুন কুঁড়িতে, হাজির হয়ে ঋতুরাজ বসন্ত প্রকৃতির মাঝে সেজেছে নতুন রূপে।
স্নিগ্ধ বসন্তের ছোঁয়া লেগেছে আজ বাঙালির মনে’
বর্ণিল সাজে মেতেছে সবাই কোকিলের কলতানে।
‘আহা, আজি এ বসন্তে, কতো ফুল ফোটে, কতো পাখি গায়…’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বসন্তের প্রেমে পড়ে লিখেছিলেন এই গান। তবে কবির মতো গান না লিখতে পারলেও বসন্তের ছোঁয়ায় নিজেকে রাঙিয়ে তোলে বসন্তপ্রেমীরা। ঋতুরাজের আগমনে যেন গুণ গুণ করে গাইতে থাকে ‘আজ বসন্ত এসে গেছে’। বর্ণিল সাজে স্বাগত জানায় প্রকৃতির নতুন স্নিগ্ধতাকে। প্রকৃতিতে সেজেছে বসন্তের আমেজে। চারদিকে সবুজের হাতছানি, পাখির কিচিরমিচির ডাক আর রঙিন সব ফুলের আগমনে প্রকৃতি যেন সেজে উঠে নতুন রূপে।
শিমুল, পলাশ ফুলের মিষ্টি সুবাসে, ভরে উঠে মন আনমনে
অপরুপ সাজে সেজেছে ঋতুরাজ, বসন্তের প্রেমে।
সবুজের হাতছানি যেন ডাকে প্রকৃতির টানে।
দিনক্ষণ গুনে গুনে বসন্ত বরণের অপেক্ষায় থাকে বাঙালি। এ যেন বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম এক উৎসব। আমেজের মায়া। যেখানে শীতকে বিদায় জানিয়ে বসন্ত বরণের আয়োজন করে বাঙালি। শীত চলে গেছে তার প্রকৃতি নিয়মে, আর বসন্ত এসেছে বর্ণিল ফুলের ডালা সাজিয়ে। বাসন্তী ফুলের পরশ আর সৌরভে কেটে যাবে শীতের আভাস।
বসন্তকে বরণ করে নিতে বাঙালি নানা আয়োজন করে। মেলা, এমনকি পিঠাপুলির উৎসবেও মেতে উঠে বাঙালি। মন রাঙায় বসন্তের রঙ-বেরঙে। প্রাচীন আমল থেকেই বাংলার অঞ্চলে পালিত হয় বসন্ত উৎসব।
বঙ্গাব্দ ১৪০১ সাল থেকে প্রথম চালু হয় ‘বসন্ত উৎসব’ উদযাপন রীতি। বসন্তের প্রথম দিনে তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে ছোট-বড় সবাই নিজেকে রাঙিয়ে তোলে বাসন্তী রঙে। সুশোভিত করা হয় রাজধানীর রাজপথ, পার্ক, বইমেলা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরসহ পুরো শহর। রাস্তার বাহারি রঙের আল্পনায় যেন জানান দেয় আজ বসন্ত। বসন্তের দোলা ছড়িয়ে পড়ে সব বাঙালির ঘরে ঘরে।
কোকিলের ডাক, রঙিন কৃষ্ণচূড়া আর আমের মুকুলের কথা বইয়ের পাতায় বাঁধা পড়লেও, একালের বাঙালিরা কিন্তু বসে থাকতে রাজি নন। গায়ে হলুদ আর বাসন্তী রঙের শাড়ি জড়িয়ে তরুণ-তরুণীরা নিজেদেরকে মেলে ধরেন বসন্তের ছোঁয়ায়। ছোট ছোট বাচ্চা গুলো মাথায় বর্ণিল ফুলের মুকুট জড়িয়ে বসন্তকে স্বাগত জানায়, আনন্দে মেতে উঠে।