নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা থানাধীন তল্লা ও খানপুর এলাকার অলিতে গলিতে হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক ব্যবসায়ী মফফা সুমনের গাঁজা, মদ, ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ যে কোন ধরনের মাদকদ্রব্য।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই মাঠ পর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী আগের মতো সক্রিয় নেই। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তল্লা ও খানপুর এলাকায় অবাধে চলছে মাদক কারবারি মফফা সুমনের রমরমা ব্যবসা।মাদকের করাল গ্রাসে আসক্ত হয়ে ডুবে থাকছে এলাকার উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত শ্রেণির হাজারো মানুষ। এ তালিকায় রয়েছে উঠতি বয়সী যুবসমাজ, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এতে উপজেলা জুড়ে মাদকসেবীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এলাকায় উঠতি বয়সী তরুণ ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রদের মাঝে মাদকসেবীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বিগ্ন-উৎকণ্ঠায় আছেন অভিভাবকমহল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একসময় এইসব এলাকায় ফেনসিডিল, গাঁজা ও মদের ব্যবসা করতেন গুটি কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী। তাও বেচাকেনা হতো খুব গোপনে। এখন গাঁজা-মদের পাশাপাশি চলছে মরণনেশা ইয়াবা ট্যাবলেটের রমরমা ব্যবসা। যা প্রকাশ্যে বিক্রি করছে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী সুমন ওরফে মফফা সুমন। শুধু তাই নয়, এসব ইয়াবার ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েছেন প্রভাবশালী পরিবারের অনেক তরুণ যাদের প্রতিরোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন। স্থানীয়রাও ভয়ে এসব মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারছেন না। ফলে এখন অবাধে চলছে মাদক কেনা-বেচা। মাদক কেনা-বেচার সঙ্গে জড়িতদের বেশির ভাগেরই বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। সচেতন নাগরিক সমাজ মাদকের এই ভয়াল থাবা থেকে নতুন প্রজন্মকে বাঁচাতে স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি বলেছেন, যুবসমাজের একটি বড় অংশ মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। নেশায় আসক্ত এসব যুবক মাদকের টাকা জোগাড় করতে জড়িয়ে পড়ছে চুরি, ছিনতাই, হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে। গ্রামগঞ্জে প্রায়ই ঘটছে দিনদুপুরে চুরির ঘটনা। সবমিলিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় আছেন অভিভাবকরা। তাদের অনেকেই নেশায় আসক্ত সন্তানদের সুপথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন।এলাকায় প্রশাসনের তৎপরতায় মাদক উদ্ধার এবং মাদক ব্যবসায়ী আটক না করা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন এলাকার সচেতন মানুষ।
এ বিষয়ে ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে আমরা আগেও সোচ্চার ছিলাম এখনও আছি। চলমান পরিস্থিতিতে আমাদের পুলিশ সদস্যরা কিছুটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিল। আশা করছি, দ্রুতই আমরা মাদকের বিরুদ্ধে পুরো উদ্যোমে কাজ শুরু করব।