আমার নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১১) বিপুল পরিমাণ চোরাচালানকৃত ভারতীয় শাড়ি ও থ্রি-পিস সহ এক চোরাকারবারিকে আটক করেছে। শুক্রবার (৩১ মে, ২০২৫) রাতে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
র্যাব-১১ সূত্রে জানা যায়, নিয়মিত টহল ডিউটির অংশ হিসেবে শুক্রবার আনুমানিক রাত ৯টা ০৫ মিনিটে বন্দর থানার মদনপুর বাজার এলাকায় র্যাবের একটি দল অবস্থান করছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারে, কতিপয় চোরাকারবারি একটি কাভার্ড ভ্যানে করে ভারত থেকে অবৈধভাবে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা শাড়ি ও থ্রি-পিসসহ বিভিন্ন পণ্য কুমিল্লা থেকে ঢাকার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
এই তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব সদস্যরা মদনপুরে রাফি ফিলিং স্টেশনের সামনে চট্টগ্রাম-ঢাকাগামী মহাসড়কে একটি অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপন করে সন্দেহজনক কাভার্ড ভ্যান তল্লাশি শুরু করে। রাত আনুমানিক ১০টা ১০ মিনিটে একটি সন্দেহজনক কাভার্ড ভ্যানকে থামার সংকেত দেওয়া হলে চালক মো. মিকাইল হোসেন রয়েল (৩১) গাড়ি থামিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। র্যাব সদস্যরা তাকে ধাওয়া করে আটক করতে সক্ষম হয়।
আটক মিকাইল হোসেন রয়েলের পিতার নাম আবুল হোসেন, মাতা মোছাঃ সাহিদা বেগম। তার গ্রামের বাড়ি যশোরের মনিরামপুর থানার পলাশীতে হলেও বর্তমানে সে কুমিল্লার বুড়িচং থানার দেপপুর পাওয়ার হাউজ এলাকায় মনির মিয়ার গ্যারেজের পাশে বসবাস করে আসছিল।
আটক মিকাইলকে পালানোর কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারায় কাভার্ড ভ্যানটি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ভ্যানের ভেতর থেকে ৩৬১৩ পিস ভারতীয় শাড়ি এবং ৩৫৪ পিস ভারতীয় থ্রি-পিস উদ্ধার করা হয়। এগুলোর কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি মিকাইল।
উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে জিজ্ঞাসাবাদে মিকাইল স্বীকার করে, জব্দকৃত মালামাল ভারতের সীমান্ত এলাকা থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে কুমিল্লার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আনা হয়েছে এবং বিক্রির জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সে আরও জানায়, কাভার্ড ভ্যানটির মালিক আরিফ মজুমদার। সে মাসিক ২০,০০০ টাকা বেতনে আরিফের প্রতিষ্ঠানে ৭-৮ মাস ধরে ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত। শুক্রবার বিকেলে আরিফ মজুমদারের লোকজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানার কাঠেরপুল সীমান্ত এলাকা থেকে মালামালগুলো কাভার্ড ভ্যানে লোড করে দেয় এবং একটি অজ্ঞাতনামা প্রাইভেটকার পাহারায় তাদের ঢাকার দিকে রওনা করিয়ে দেয়।
মিকাইল আরও স্বীকার করে, কাভার্ড ভ্যানের মালিক আরিফ মজুমদার, ম্যানেজার খোরশেদ এবং আরও ২-৩ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির সহযোগিতায় তারা দীর্ঘদিন ধরে ভারত থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন পণ্য চোরাচালান করে আসছে।
উদ্ধারকৃত শাড়ি, থ্রি-পিস এবং চোরাচালানে ব্যবহৃত কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামি মো. মিকাইল হোসেন রয়েলের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। র্যাব চোরাচালান সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।