আমার নারায়ণগঞ্জ:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গুলিতে জুতা কারখানার শ্রমিক সজল মিয়া হত্যার ঘটনার প্রায় ১০ মাস পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ১৬ মে নিহত ব্যক্তির মা রুনা বেগম বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এই হত্যা মামলা করেন।
আজ সোমবার মামলার বিষয়টি জানাজানি হয়। নিহত সজল (২০) সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকার হাসান আলীর ছেলে। তিনি সিদ্ধিরগঞ্জে মৌচাক এলাকায় একটি জুতা কারখানায় কাজ করতেন।
মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম, শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমান, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ্ নিজামসহ ৬২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ১৫০ জনকে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর আলম প্রথম আলোকে বলেন, সজল হত্যার ঘটনায় নিহত ব্যক্তির মা রুনা বেগম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় ৬২ জনকে এজাহারনামীয় করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত বছরের ২০ জুলাই বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে আসামিরা লাঠিসোঁটা, দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, শটগান, ককটেল ও ইটপাটকেল নিয়ে হামলা করে। এ সময় ছাত্র-জনতার ওপর এলোপাতাড়ি গুলি করাসহ মারধর করে গুরুতর জখম করা হয়। এ ঘটনায় বাদীর ছেলে সজল আসামিদের ছোড়া গুলিতে পেটে গুলিবিদ্ধ হয় আহত হন। তাঁকে ছাত্র-জনতা উদ্ধার করে শিমরাইল সুগন্ধ্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
বাদী মামলায় আরও উল্লেখ করেন, তখন দেশের পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ময়নাতদন্ত না করে ছেলের লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করেন। আসামি শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সেলিনা হায়াৎ আইভীরা হামলায় প্ররোচনা দেন। আসামি শামীম ওসমান, তাঁর ভাতিজা আজমেরী ওসমান ও ছেলে অয়ন ওসমানরা ঘটনার সময় উপস্থিতি ছিলেন ও নির্দেশ দেন। অন্য আসামিরা ছাত্র-জনতাকে মারধরসহ গুলি করে হত্যা করে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।